WBCS Exam Preparation: WBCS পরীক্ষায় লক্ষ্য়ভেদ! ভয় নয় গল্পের ছলেই পড়া শুরু হোক ইতিহাস
ABP Live Exclusive: WBCS পরীক্ষাতেও ইতিহাসের বেশ গুরুত্ব রয়েছে। এবিপি লাইভে ছাত্রছাত্রীদের ইতিহাস সংক্রান্ত বিভিন্ন জিজ্ঞাসার উত্তর দিচ্ছেন WBCS অফিসার ঋষিকা দাস।
কলকাতা: ইতিহাস মানে অজানাকে জানা, অচেনাকে চেনা। ইতিহাস মানে যা কিছু ফেলে আসা, সেই সম্পর্কে একটা ধারণা। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অনেকেরই ইতিহাস নিয়ে ভীতি থাকে। অনেকেই আবার এই বিষয়কে বেশ পছন্দও করেন। WBCS পরীক্ষাতেও ইতিহাসের বেশ গুরুত্ব রয়েছে। এবার আলোচনার বিষয় ইতিহাস। এবিপি লাইভে ছাত্রছাত্রীদের ইতিহাস সংক্রান্ত বিভিন্ন জিজ্ঞাসার উত্তর দিচ্ছেন WBCS অফিসার ঋষিকা দাস। বর্তমানে যিনি রাজারহাটের বিডিও।
এবিপি লাইভ: MCQ না বই পড়া, ইতিহাসের ক্ষেত্রে কোনটাকে প্রাথমিক গুরুত্ব দেওয়া উচিত?
ঋষিকা দাস: WBCS মেনস পরীক্ষায় ইতিহাস একশো শতাংশই MCQ। বই পড়াটাই প্রাধান্য দেব। বই না পড়লে কনসেপ্ট ক্লিয়ার হবে না। MCQ মুখস্থ করা সম্ভব নয়। MCQ-তে চারটে অপশন রয়েছে। কিন্তু সেই বিষয় সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। ব্যাকগ্রাউন্ড না জানলে MCQ- র উত্তর দেওয়ায় সম্ভব নয়। তাতে সমস্যা হবে। ইতিহাস মূলত একটা গল্প। আমরা প্রত্যেকেই ছোট থেকে গল্পের বই পড়েছি। গল্পের বই পড়তে অনেকেরই ভাল লাগে। শুধু পড়ার জন্য নয়, গল্পের মতোই ইতিহাস পড়া শুরু করা উচিত। MCQ-র মতো বেশ কিছু বই থাকে, সেটা পড়লে ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরি হয়ে যায়।
এবিপি লাইভ: বিষয় ভিত্তিক MCQ করতে হবে না কি গোটা সিলেবাস শেষ করে MCQ করা উচিত?
ঋষিকা দাস: ইতিহাসের সিলেবাসেই রয়েছে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল মুভমেন্টকে গুরুত্ব দিতে হবে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল মুভমেন্ট যখন কেউ পড়া শুরু করছে তখন সেটা শেষ করে করাই ভাল। অথবা টপিকের উপর নির্ভর করে MCQ সমাধান করা যেতে পারে। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ, মহাত্মা গাঁধী যেসব আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সেই সব আন্দোলন একসঙ্গে পড়ে তার MCQ সমাধান করা যায়। পরপর ঘটনাপ্রবাহ ধরে এগোলে পড়ার ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে। অথবা যেসব বইতে বিষয়ের পর MCQ রয়েছে, সেই MCQ গুলো নোট করে লিখে পড়া যেতে পারে। কোনও কোনও আন্দোলন পরপর সাজাতে হবে এমন প্রশ্ন আসে। তাই কোনও টপিক পুরোটা না পড়লে তার উত্তর দেওয়া কঠিন। এর পাশাপাশি পূর্ববর্তী বছরে কেমন প্রশ্ন এসেছিল তা দেখেও কী পড়তে হবে, সেটা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
এবিপি লাইভ: সাল মনে রাখা যাবে কীভাবে?
ঋষিকা দাস: আমি প্রস্তুতি নেওয়ার সময়, বিভিন্ন টপিক নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করতাম। আমরা যেভাবে পড়ি, আমাদের মাথায় কিন্তু সেভাবেই তৈরি হয়। কোনও ছোট রাস্তা হয় না। একাধিকবার সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি পড়তে হবে। যদি কিছু মনে না থাকে, সেখানে নোট করে রাখা যেতে পারে। ঘটনাক্রম অনুযায়ী কোথাও সাল পরপর লিখে রাখা যায়। এক্ষেত্রেও ব্যাকগ্রাউন্ড মনে রাখা দরকার। ঘটনাটা জানলে অনায়াসেই সাল মনে থাকে। ধরা যাক কোনও নির্দিষ্ট সাল মনে রাখতে হবে, সেই সময় গভর্নর জেনারেল কে ছিলেন, ভাইসরয় কে ছিলেন এগুলো জানা থাকা উপকারী হবে।
এবিপি লাইভ: Ancient history না Indian history, কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ?
ঋষিকা দাস: সিলেবাসে বলাই আছে ভারতীয় আন্দোলনের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। তার মানে অন্য অংশটা বাদ দেব, বা কম পড়ব, এরকম নয়। কারণ, একশোটা প্রশ্নেরই উত্তর দিতে হবে। অথবা থাকে না কোনও প্রশ্নে। Ancient history- মধ্যে মহেঞ্জদারো-হরপ্পা সহ একাধিক বিষয় বেশ জানা। কিন্তু প্রতিবছরই পরীক্ষা কঠিন হচ্ছে। তাই কোনও জিনিস বাদ দেব এটা করলে ভাল নম্বর পাওয়া যায় না। তবে সারাদিন ইতিহাসের সময় দেব, এটাও যেন না হয়। রাতারাতি বই পাল্টে ফেলার দরকার নেই।
এবিপি লাইভ: ইতিহাস পড়ার ক্ষেত্রে ফ্লোচার্ট বা ডায়াগ্রাম তৈরি করে পড়া যায়?
ঋষিকা দাস: অনেকে UPCS –তে মাইন্ড ম্যাপ ফরম্যাট ফলো করেন। ইতিহাসের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ঘটনা ফ্লো চার্ট করে পড়লে মনে থাকবে। আলাদা খাতার বদলে বইতেও লিখে রাখা যায়।
এবিপি লাইভ: MCQ- র উত্তর দিতে গিয়ে ভুল হয়ে গেলে ঠিক করার উপায় কী?
ঋষিকা দাস: MCQ ভুল হলে ঠিক করার কোনও উপায় নেই। যে উত্তর ঠিক মনে হচ্ছে সাবধানতার জন্য প্রশ্নপত্রে মার্ক করা যায়। যাতে পরে কনফিউশন হলেও পরে ঠিক করা যায়। একশো শতাংশ নিশ্চিত হয়েই OMR শিটে মার্ক করা উচিত। কারণ এই পরীক্ষায় প্রতিটা নম্বরই খুব গুরুত্বপূর্ণ। সময় নিয়ে কোনও সমস্যা হয় না। কারণ MCQ সমাধানের জন্য যথেষ্ট সময় থাকে।
এবিপি লাইভ: ইতিহাসে একাধিক আন্দোলনের কথা উল্লেখ থাকে, মনে রাখার সহজ উপায় কী?
ঋষিকা দাস: পড়তে বসে প্রথমে কোনও ঘটনাক্রম পড়ে ফেলতে হবে। এক্ষেত্রে মহাত্মা গাঁধীর একাধিক আন্দোলনের কথা বলা যায় উদাহরণ হিসেবে। একটা সিকোয়েন্স তৈরি করে নিতে হবে। যেমন অসহযোগ আন্দোলন কবে হয়েছিল? ওই দিন আর কী কোনও ঘটনা ঘটেছিল? অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে খিলাফৎ আন্দোলেনর কী কী যোগ রয়েছে? এখনে গাঁধীর কী ভূমিকা ছিল? এই সব পরপর ঘটনা। তাই ঘটনাগুলি আগে সাজিয়ে নিতে হবে। ব্যাকগ্রাউন্ডটা গল্প ভাবলেই এই পড়াটা অনেক সহজ হবে।
এবিপি লাইভ: অনেক সময় দেখা যায় MCQ সমাধান করতে গিয়ে দেখা যায়, অনেক বিষয়ই সংশ্লিষ্ট পড়ুয়া যে বইতে পড়ছেন তাতে নেই, সেক্ষেত্রে কী করতে হবে?
ঋষিকা দাস: MCQ-র একশো শতাংশ কমন পাওয়া যাবে এরকম হয় না। ধরেই নিতে হবে সব কমন আসবে না। তাই না জানা এমন প্রশ্নের জন্য একটা খাতা করা উচিত। যাতে পরে রিভিশন করার সময় ওই প্রশ্নগুলো পাওয়া সম্ভব হয়। লিখে না রাখলে ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। যেমন UPSC অনেক প্রশ্ন WBCS – এও আসে। তবে এতে ঘাবড়ে যাওয়ার কোনও কারণ নেই। এক লাইন হিসেবে শুধু উত্তর লিখে রাখা যায়।
এবিপি লাইভ: যাঁরা মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পর ইতিহাস পড়ছেন, এত বছর পর কীভাবে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করবেন?
ঋষিকা দাস: গল্পের বইয়ের বিকল্প হিসেবে ইতিহাস পড়া শুরু উচিত। তাতে সুবিধা হয় পড়ার ক্ষেত্রে। আমার নিজের তাই হয়েছে। সব সময় মোটা বই পড়তে হবে এরকম নয়। ছোট বই পড়েই শুরু করা যায়। এমনকি পড়ার সময় মার্কও করতাম না। কোনও ম্যাক বুক পড়া যায় শুরুতে। জেনারেল নলেজ পড়ছি এই মানসিকতা নিয়ে পড়া শুরু করতে হবে। এটা একদিনেই হবে এমন নয়, ধীরে ধীরে পড়ার গতি বাড়াতে হবে। এটাই পদ্ধতি। একদিনে সব হবে সেটা মন থেকে মুছে ফেলতে হবে।
এবিপি লাইভ: ইতিহাসের জন্য স্ট্রেটেজি কী হবে?
ঋষিকা দাস: ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি গল্পের মতো করেই পড়া উচিত। ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। কোনও বন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করে পড়লে বিষয়গুলো মনে গেঁথে যায়। যে কোনও বিষয়ের ক্ষেত্রেই নিজে নোটস তৈরি করা যায়। ইতিহাসের ক্ষেত্রেও তাই।
আরও পড়ুন: WBCS Exam Preparation: বাংলায় কি ভাল নম্বর পাওয়া সম্ভব? WBCS-এ কীভাবে নেবেন প্রস্তুতি?
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI