Hair Care in Monsoon: বর্ষায় চুলের যত্ন নেওয়ার কয়েকটি সহজ উপায়
স্যাঁতস্যাঁতে বর্ষাকালে চুলের যত্ন নেবেন কীভাবে? জেনে নিন খুব সহজ কয়েকটি উপায়।
কলকাতা : গ্রীষ্মের প্রবল দাবদাহ, অস্বস্তির পর বর্ষা যেমন একটুকরো খোলা হাওয়া। ছোটবেলার প্রবন্ধ রচনা খানিক এভাবেই শুরু করতাম অনেকেই। মনে পড়ে? বয়স বাড়ার সঙ্গে অবশ্য বর্ষার সংজ্ঞা পাল্টেছে। গ্রীষ্মের রুক্ষতা ধুইয়ে দেওয়া ছাড়াও বর্ষা অনেকের কাছেই প্রেমের মরশুম। টাপুর-টুপুর বৃষ্টির সঙ্গে আম বাঙালির রোম্য়ান্টিক সম্পর্ক চিরকাল। কিন্তু বর্ষার কি সবকিছু কেবল ভাল? আজ্ঞে না, আর সেখানেই তো সমস্যা। যদি সঠিকভাবে যত্ন না নেওয়া হয়, তাহলে বর্ষাকাল আপনার চুল আর স্ক্যাল্পের যথেষ্ট ক্ষতি করতে পারে। বিভিন্ন ঋতুর উপর নির্ভর করে যেমন স্কিনকেয়ার রুটিন বদলান, সেরকমই এবার থেকে নজর দিন আপনার চুলের দিকেও। সঠিক যত্ন, পুষ্টি তো তারও প্রয়োজন।
বর্ষা চুলের ক্ষেত্রে কেন ক্ষতিকর ?
- বর্ষাকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ থাকে অনেক বেশি। যা আপনার ঘন, কালো চুলকে একেবারে রুক্ষ, শুষ্ক করে দিতে পারে। এতে চুল পড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
- বৃষ্টির জল রোজকার স্নানের জলে মিশলে তাতে স্বভাবতই অ্যাসিডের মাত্রাও বাড়ে। যা স্ক্যাল্পকে ভীষণভাবে রুক্ষ করে। এরসঙ্গে স্ক্যাল্পে একটা আলাদা আস্তরণ তৈরি করে। যার থেকে খুশকি জাতীয় সমস্যা দেখা যায়।
- বর্ষার স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় চুল শুকোতে অনেক বেশি সময় লাগে। ফলে ভেজা বা আধভেজা চুল থেকে ইনফেকশন বা চুলকানির সমস্যার সৃষ্টি হয়।
এমন নাছোড়বান্দা আবহাওয়ায় কীভাবে নেবেন চুলের যত্ন?
এত সব সমস্যা দেখে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছুই নেই। চুলের নিয়মমাফিক খানিক যত্ন আবার সতেজ করে দিতে পারে আপনার রুক্ষ-শুষ্ক-ঝরতে শুরু করা চুলকে। আর এক্ষেত্রে আপনার সাহায্য করতে পারে এই টিপসগুলো। এই সহজ হেয়ার কেয়ার রুটিন ফলো করলে বহাল থাকবে আপনার চুলের ঔজ্জ্বল্য।
- নিয়মিত পরিষ্কার: বর্ষার ক্রমবর্ধমান আর্দ্রতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে খুশকি, আর সেই সঙ্গে চুলকানিও। চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার অন্তত শ্যাম্পু দিয়ে ভাল করে চুল পরিষ্কার করুন। অবশ্যই এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন যা আপনার চুল ও স্ক্যাল্প টাইপের সঙ্গে মানানসই। সপ্তাহে একবার অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করলেও অনেকটা তফাত নজরে পড়বে। একটা কথা সবসময়েই মনে রাখবেন, চুল ধোবেন সবসময় সাধারণ উষ্ণতার জলে। গরম জলে চুল আরও শুকনো হয়ে যেতে পারে। আবার ঠান্ডা জল চুল ড্যামেজ করে দিতে পারে।
- কন্ডিশনার বা মাস্ক: শুনেই খুব কঠিন কাজ মনে হচ্ছে? কিন্তু একবার অভ্যেস করে ফেলতে পারলেই দেখবেন আর সমস্যা হচ্ছে না। উল্টে সুফল তো আছেই। চুলের গোড়া ভেঙে যাওয়া, অকালে ঝরে যাওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ফ্রিজি বা উশকোখুশকো চুলকে বশে আনতে এবং ময়শ্চারাইজ করতে কন্ডিশনার বা মাস্ক ব্যবহার করা একান্ত প্রয়োজনীয়। শ্যাম্পুর পর মাত্র ৫-১০ মিনিট কন্ডিশনার লাগিয়ে রাখুন। তাতেই কেল্লাফতে!
- সিরাম: শ্যাম্পু, কন্ডিশনারের পর সিরাম। চুলে জট পড়া থেকে রেহাই। জট থেকেও অনেক সময়েই চুল ঝরে পড়ার প্রবণতা বাড়ে। সিরাম ব্যবহারে চুল চকচকেও হয়। চুল নরম করতেও কাজে লাগে সিরাম। ভিজে চুলে ঠিক ২-৩ ফোঁটা সিরাম লাগালেই যথেষ্ট।
- তেল: শুধু শ্যাম্পুই নয়, চুল ভাল রাখতে নিয়মিত তেল লাগানোও প্রয়োজন। মনে রাখবেন, সবসময় হালকা এবং পুষ্টিকর তেল ব্যবহার করা উচিত। শ্যাম্পুর আগেরদিন গোটা রাত মাথায় তেল লাগিয়ে রেখে দিন। যদি সময়ের অভাবে তা সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তত শ্যাম্পুর এক ঘণ্টা আগে তেল লাগিয়ে রাখুন। নিয়মিত অয়েল ম্যাসাজ রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। যার ফলে মাথায় চুলকুনি, শুষ্কতা কমে এবং চুল বাড়েও তাড়াতাড়ি।
- স্টাইলিং: সুন্দর দেখাতে অনেকরকম স্টাইলিং আমরা সকলেই করে থাকি। নানারকম হেয়ারকাট, হেয়ার কালার। তবে চুল সর্বদা এমন দৈর্ঘ্যের হওয়া উচিত যা আপনি ম্যানেজ করতে পারবেন। নিয়মিত ট্রিম করা, কাঠের চিরুণি ব্যবহার করা ইত্যাদি চুল ঝরা কমায়। ব্লো ড্রায়ার, স্ট্রেটনার, কার্লিং রড ব্যবহার করার থেকে হাওয়ায় চুল শুকনো সবসময়েই ভাল। এই সমস্ত মেশিনে যে তাপমাত্রা ব্যবহার করা হয়, তাতে চুল পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ভবিষ্যতেও চুল নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
- পুষ্টিকর খাবার: ট্রিটমেন্ট, স্টাইলিং বা বিভিন্ন রুটিন মেনে চলা তো ঠিকই আছে। এর ফলে চুলের গঠন, ঔজ্জ্বল্য, স্বাস্থ্য ভাল হয়। তবে এসবের থেকে বেশি প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবার খাওয়া। খাদ্যতালিকায় ভিটামিন-A, জিঙ্ক, আয়রন এবং বায়োটিন সম্বলিত খাবারের পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন। এরফলে কোলাজেন ও নতুন কোষ সৃষ্টির পরিমাণ বাড়ে।
মেনে চলুন, এই সহজ কয়েকটি উপায়। সুস্থ থাকুন, ঝলমলে থাকুন গোটা বর্ষাকাল। (তথ্য-সৌজন্য : IANSlife)
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )